বরগুনায় ছাত্রলীগ কর্মীদের পুলিশের পিটুনি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি বলেছেন, পুলিশের উদ্দেশ্যই ছিল ছাত্রলীগের ছেলেদের মারবে।
ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু আরও বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যে গাড়ি ভাঙচুর করেছে- তাকে তারা চিনতে পেরেছে। আমি বলেছিলাম, যে ভাঙচুর করেছে, তাকে দেখিয়ে দিন।আমি তাকে আপনাদের হাতে সোপর্দ করব। আসলে তাদের (পুলিশের) উদ্দেশ্যই ছিল ছাত্রলীগের ছেলেদের মারবে। আমি তাদের মার ফেরানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওখানে এত পুলিশ আসছে যে সেখানে কমান্ড শোনার মতো কেউ ছিল না।
সোমবার রাত ৯টার দিকে শোক দিবসের এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আজ (সোমবার) দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। ওখানে পুলিশ কর্মকর্তা মহররম ছিলেন। তিনি যেসব কমান্ড করেছেন, তার কিছুই পালন হয়নি। আজ তিনি অনেক ভুল করেছেন। আমরা চাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার বিষয়টি দেখুক এবং তাকে বিচারের আওতায় আনুক। এই ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বরখাস্তের দাবি করে তিনি।
শম্ভু বলেন, আমি যেখানে উপস্থিত, সেখানে তিনি এমন কাজ করতে পারেন না। আমি তাকে মারপিট করতে নিষেধ করেছিলাম। তারা (পুলিশরা) আমার কথা শোনেনি। ইতোমধ্যে বিষয়টি দেখার জন্য ডিআইজি সাহেব অ্যাডিশনাল জিআইজি মহোদয়কে পাঠিয়েছেন।
সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের পরামর্শ ছাড়াই জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনের আগে কাউন্সিল বাধ্যতামূলক, এ কমিটি দেওয়ার আগে সেটাও করা হয়নি। আপনারা জানেন ছাত্রলীগ করতে হলে যে পাঁচটি শর্তের কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সে শর্তগুলো কমিটিতে মানা হয়নি। আমরা আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবকদের বিষয়টি জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা আসার অপেক্ষা করছি।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে ফুল দিতে যান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমি ভবনে আটকে গণহারে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পেটায় পুলিশ।
এর আগে দীর্ঘ আট বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা শহরের সিরাজ উদ্দীন টাউন হল মিলানায়তনে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ জুলাই রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেন।
এতে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৩ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই সদ্য ঘোষিত এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বরগুনা শহরে পদবঞ্চিতরা প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।